ছাত্রলীগের সম্মেলন কবে, ঘোষণা ৫ এপ্রিল

ছাত্রলীগের সম্মেলন কবে, ঘোষণা ৫ এপ্রিল

সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষিত হতে যাচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ২৯তম জাতীয় সম্মেলনের তারিখ।

 

২৯তম জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে ৫ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) সকাল ১০ টায় ছাত্রলীগের প্রধান কার্যালয় বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে সংগঠনটি। এ সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হবে।

 

এদিকে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার কথা শুনে সরগরম হয়ে উঠেছে ছাত্ররাজনীতির আঁতুড়ঘর হিসেবে খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী মধুর ক্যান্টিন। নেতাকর্মীদের ভিড়ে মুখরিত এখন এ ক্যান্টিন। তাদের আলোচনার বিষয়, কোন এলাকা থেকে নেতা আসছেন, কে ত্যাগী নেতা, কার পারিবারিক অবস্থা কেমন প্রভৃতি।

 

এর আগে ৬ জানুয়ারি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে মার্চ মাসে ছাত্রলীগের সম্মেলন হওয়ার ঘোষণা দেন। এরপর ৮ জানুয়ারি ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অনানুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেন সম্মেলন ৩১ মার্চ ও ১ এপ্রিল হবে। এ ঘোষণায় উজ্জীবিত হতে দেখা যায় সব স্তরের নেতাকর্মীদের। মধুর ক্যান্টিনে তাদের নিয়মিত আসা- যাওয়ায় সরগরম হয়ে উঠেছিল এ ক্যান্টিন। কিন্তু তারপর অনেক দিন পেরিয়ে গেলেও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেননি সম্মেলনের তারিখ। সম্মেলনের কোনো প্রস্তুতিও দেখা যাচ্ছিল না। ফলে দ্বিধায় পড়ে যান নেতাকর্মীরা। সরগরম মধুর ক্যান্টিন যেন হঠাৎ তার প্রাণ হারায়। বন্ধ হয়ে যায় সম্মেলনকে ঘিরে জমে ওঠা আড্ডা।

 

 

সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার খবরে সরগরম মধুর ক্যান্টিন

 

নেতাকর্মীদের উৎসাহ আরো মিইয়ে যায়, যখন ৯ মার্চ ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা দেন যে, ৩১ মার্চ তারিখে সম্মেলন হবে না।

 

নেতাকর্মীরা সম্মেলন হবে কি হবে না – সেটা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণার দাবি জানান। কিন্তু ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সম্মেলনের তারিখ পরে জানানো হবে বলে গণমাধ্যমকর্মীদের জানান।

 

পরে ৩১ মার্চ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মে মাসের প্রথম অথবা দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে ছাত্রলীগের সম্মেলন করার নির্দেশ দেন বলে জানা যায়।

 

প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশের পর গত ২ এপ্রিল ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক দেলোয়ার শাহাজাদা প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সম্মেলনকে ঘিরে আগামী ৫ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলনের ঘোষণা দেন। আর এ ঘোষণায় ফের সরগরম হয়ে উঠেছে মধুর ক্যান্টিন।

 

আসলেই সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসছে কিনা জানতে চাইলে ছাত্রলীগের শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক গোলাম রব্বানী বিবার্তাকে বলেন, “ছাত্রলীগের পবিত্র গঠনন্ত্রের বাধ্যবাধকতা ও নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে নিয়মতান্ত্রিকভাবে সম্মেলন হওয়া জরুরী। ছাত্রলীগ ইতিহাস সৃষ্টি করে, পথ দেখায়। আদর্শিক পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া এই ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠনে নেতৃত্বের সেশনজট কখনোই কাম্য নয়, সঠিক সময়ে জাতীয় সম্মেলন লাখো লাখো তৃণমূল নেতাকর্মীর প্রাণের দাবি। প্রত্যাশা রাখি, ২৯তম জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে বেরিয়ে আসবে যোগ্য নেতৃত্ব, ছাত্রলীগ ফিরবে ইতিবাচক ধারায়।”

 

সম্মেলনের বিষয়ে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আদেশ বাস্তবায়নে ছাত্রলীগের প্রতিটি পর্যায়ের নেতাকর্মী যেন সচেতন, প্রজ্ঞাবান হয়ে সম্মেলনকে সফল করেন।

 

উল্লেখ্য,ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন ২০১৫ সালের ২৬ ও ২৭ জুলাই ২৮তম সম্মেলনের মাধ্যমে শীর্ষ এ দুই পদ লাভ করেন। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ছাত্রলীগের কমিটির মেয়াদ দুই বছর। সে হিসাবে ২০১৭ সালের জুলাইয়ে এ কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার কথা ছিল।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment